যশোরঃ জেলার শার্শা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২ বছরের উর্ধ্বের ৯২ দশমিক ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ করোনা ভাইরাসের টিকার আওতায় এসেছে।
গত ২৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারন ফজিলাতুননেছা মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদানের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু হয়। সর্বশেষে ১৯ জানুয়ারী বাগআঁচড়া ডা. আফিল উদ্দিন কলেজ ক্যাম্পাসে এই কর্মসূচিতে প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চৌধুরী হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার সবগুলো স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের বয়স ১২ বছরের বেশি তাদেরকেই কেবল টিকা দেওয়া হয়েছে। এই বয়সের মোট শিক্ষার্থী ছিল ২৮ হাজার ১৬৯জন। এদের মধ্যে টিকা গ্রহন করেছেন ২৬ হাজার ১৩৫ জন। ২ হাজার ৩৪ জন টিকা কেন্দ্রে আসেনি। যারা টিকা কেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেনি তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটা নির্দিষ্ট দিন উপস্থিত করিয়ে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলি বলেন, স্কুল কলেজের এসব শিক্ষার্থীদেরকে ‘ফাইজারের’ টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ‘ম্যানুয়ালী টিকাদান কার্ড পূরন করে এইচএসসি পরীক্ষার নিবন্ধন কার্ড, জন্মসনদ ও মোবাইল ফোনের নম্বর টিকাদান কেন্দ্রে জমা দিয়ে টিকা গ্রহন করছেন।”
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুজ্জামান জানান, করোনা ভাইরাসের এই টিকার আওতায় উপজেলার ৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এরমধ্যে ৪৫টি হাইস্কুলের ১৯ হাজার ৯২৬ জনের মধ্যে ১৮ হাজার ৯৪৬ জন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহন করেছে, ৩০টি মাদ্রাসার ৬ হাজার ৫০ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৭৬৪ জন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহন করেছে এবং ৯টি কলেজের ১ হাজার ৬৯৩ জনের মধ্যে ১ হাজার ৪২৫ জন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহন করেছে।
এসব টিকাদান কেন্দ্রে সামাজিক দুরত্বের কোন বালাই ছিল না। যেন উৎসব চলছিল। নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৩ থেকে ৯ হাজার কিশোর কিশোরীর এই টিকা দেওয়া হয়।
টিকা দেওয়ার পর উচ্ছাস প্রকাশ করেন ফজিলাতুননেছা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী উপজেলার বেনেখড়ি গ্রামের মুসলিমা খাতুন (১৮), ঝিকরগাছার মানিকালি গ্রামের সুমাইয়া আক্তার (২০), সুবর্নখালি গ্রামের মাহজাবিন রজনী (২০), ধলদা গ্রামের নাসরিন খাতুন (১৮), শার্শা উপজেলা কলেজের ছাত্র গাজীপুর গ্রামের এবিএম রাজিব।
মুসলিমা খাতুন (১৮) বলেন, টিকা পেয়ে আমরা খুব খুশি। সরকার আমাদের নিরাপত্তার জন্য যে ব্যবস্থা করেছেন এ জন্য সরকারকে অভিনন্দন।
অনামিকা আফরিন ছোঁয়া নামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘টিকা দিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত মনে হচ্ছে। এত দিন বড়রা টিকা নিয়েছেন। এখন আমরাও নিলাম। এর পর থেকে স্কুল কিংবা বাইরে যেতে ভয় করবে না।’
সন্তানদের টিকা দিতে পেরে অভিভাবকেরাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। অধ্যাপক বখতিয়ার খলজি নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘এখন নতুন করে ওমিক্রনের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। তাই ছেলেকে টিকা দিতে পেরে ভালো লাগছে।
আগামীনিউজ/এসএস